ঢাকাশনিবার , ১১ অক্টোবর ২০২৫
  1. অষ্টগ্রাম
  2. ইটনা
  3. কটিয়াদী
  4. করিমগঞ্জ
  5. কুলিয়ারচর
  6. কৃষি
  7. খেলাধুলা
  8. তাড়াইল
  9. নিকলি
  10. পর্যটন
  11. পাকুন্দিয়া
  12. বাজিতপুর
  13. বিনোদন
  14. ভৈরব
  15. ভোটের বাঁশি
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কটিয়াদীর ‘গরীবের ডাক্তার’ অমূল্য চন্দ্র বণিকের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ১১, ২০২৫ ৫:০৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার বিশিষ্ট চিকিৎসক, সমাজসেবক ও মানবতার প্রতীক অমূল্য চন্দ্র বণিকের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (শনিবার, ১১ অক্টোবর)। স্থানীয়দের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন “গরীবের ডাক্তার” নামে।

দীর্ঘ কর্মজীবনে অমূল্য চন্দ্র বণিক অসংখ্য দরিদ্র ও অসহায় মানুষের চিকিৎসা ও সেবায় নিজেকে সম্পূর্ণভাবে উৎসর্গ করেছিলেন। টাকার অভাবে কেউ যেন চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হন—এই বিশ্বাসে তিনি স্বল্পমূল্যে বা বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতেন। দরিদ্র মানুষের পাশে এমন নিবেদিতভাবে দাঁড়িয়ে তিনি হয়ে ওঠেন এলাকার মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রতীক।

১৯৩৭ সালে জন্ম নেওয়া অমূল্য চন্দ্র বণিক ১৯৫৩ সালে কটিয়াদী থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন এবং ১৯৫৭ সালে ঢাকা মেডিক্যাল স্কুল থেকে কম্পাউন্ডার সনদ অর্জনের মধ্য দিয়ে চিকিৎসা পেশায় যাত্রা শুরু করেন। তখনকার দিনে চিকিৎসা মানেই ছিল নিজ হাতে তৈরি করা ‘মিকচার’। কোনো ওষুধ কোম্পানির রেফারেন্স বা প্রতিনিধি ছিল না। নিজের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও মানবিক বোধ দিয়েই তিনি কার্যকর ওষুধ প্রস্তুত করে রোগীদের সেবা দিতেন।

মাঝেমধ্যে খাওয়ার মাঝপথে, কখনও গভীর রাতে ঘুম থেকে উঠে—সবসময় ছুটে যেতেন রোগীর কাছে। বিশেষ করে শিশুদের চিকিৎসায় তাঁর আগ্রহ ছিল বেশি। টাকার অভাবে কাউকে ফিরিয়ে দেননি কখনও। এই মানবিকতা ও নিবেদনই তাঁকে এলাকায় ‘গরীবের ডাক্তার’ হিসেবে অমর করে রেখেছে।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ভারতের ত্রিপুরায় ‘অক্সফাম’-এর পরিচালিত আহত মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থীদের চিকিৎসা কেন্দ্রে কম্পাউন্ডার হিসেবে কাজ করেন। সেই সময় তাঁর অবদান মুক্তিযুদ্ধের মানবিক অধ্যায়ের অংশ হয়ে আছে।

১৯৯১ সালে মাত্র ৫৪ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। জীবনের প্রায় ৩৪ বছর তিনি মানুষকে সেবা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন—যা আজও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন স্থানীয়রা।

তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কটিয়াদীর শ্রীশ্রী রাধা গোবিন্দ জিউর মন্দিরে পারিবারিকভাবে মাঙ্গলিক ক্রিয়াদি ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে প্রয়াত অমূল্য চন্দ্র বণিকের আত্মার চিরশান্তি কামনায় সকল শুভানুধ্যায়ী, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়স্বজনকে প্রার্থনায় অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

স্থানীয় প্রবীণদের ভাষায়, অমূল্য চন্দ্র বণিক ছিলেন এমন এক চিকিৎসক, যিনি শুধু অসুস্থ দেহ নয়—মানুষের কষ্ট আর প্রয়োজনও চিকিৎসা করতেন। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ইতিহাসে তাঁর অবদান আজও এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।