কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গুরুদয়াল সরকারি কলেজের হোস্টেলসমূহে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও নিরাপদ আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কঠোর নিয়ম জারি করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আ.ন.ম. মুশতাকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, হোস্টেলে রাজনৈতিক কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। এর আওতায় যেকোনো রাজনৈতিক দলের নামে মিছিল, সভা-সমাবেশ আয়োজন, লিফলেট ও পোস্টার বিতরণ এবং দেয়াল লিখন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কোনো শিক্ষার্থীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে বাধ্য করা বা নিপীড়নমূলক আচরণ করা যাবে না।
হোস্টেলসমূহে শুধুমাত্র কলেজের বৈধ পরিচয়পত্রধারী শিক্ষার্থীরা অবস্থান করতে পারবে। বহিরাগত বা পরিচয়পত্রবিহীন ব্যক্তিদের অবস্থান পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট আশ্রয়দানকারী শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
অধ্যক্ষ প্রফেসর আ.ন.ম. মুশতাকুর রহমান বলেন, “শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ এবং নিরাপদ অবস্থান বজায় রাখার স্বার্থে এই নিয়মাবলি সাময়িক সময়ের জন্য কার্যকর থাকবে এবং শিক্ষার্থীদের অবশ্যই তা মেনে চলতে হবে।”
কলেজ প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন গুরুদয়াল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মনিরুল হাসান জেনি। তিনি এর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “অধ্যক্ষ মহোদয় হোস্টেলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার কোনো অধিকার রাখেন না। এটি শিক্ষার্থীদের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করার শামিল।”
গুরুদয়াল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এমদাদুল হকও কলেজ প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে কখনোই লেজুড়বৃত্তিক কিংবা বলপ্রয়োগের রাজনীতি চাই না। আমরা চাই আদর্শের রাজনীতি চর্চা হোক। শিক্ষার্থীদের মত প্রকাশ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। প্রশাসনের এ ধরনের সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করার শামিল।”
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় ছাত্রশিবির সবসময় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।
