ঢাকামঙ্গলবার , ৫ আগস্ট ২০২৫
  1. অষ্টগ্রাম
  2. ইটনা
  3. কটিয়াদী
  4. করিমগঞ্জ
  5. কুলিয়ারচর
  6. কৃষি
  7. খেলাধুলা
  8. তাড়াইল
  9. নিকলি
  10. পর্যটন
  11. পাকুন্দিয়া
  12. বাজিতপুর
  13. বিনোদন
  14. ভৈরব
  15. ভোটের বাঁশি
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে কিশোরগঞ্জে তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর কোরআন খতম

প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
আগস্ট ৫, ২০২৫ ৪:০৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

২০২৪ সালের জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান—যা রচিত হয়েছিল সাধারণ মানুষের রক্তে, দেশের গণতন্ত্র ও অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের স্মরণে কিশোরগঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো এক ব্যতিক্রমধর্মী ধর্মীয় আয়োজন।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেলে কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক শহীদি মসজিদ চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় “স্কুল শিক্ষার্থীদের গণ-কোরআন খতম” অনুষ্ঠান। এতে অংশ নেয় জেলার বিভিন্ন স্কুলের তিন শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী। আয়োজনটি পরিচালনা করে আফতার স্কুল মক্তব বাংলাদেশ, আর সহযোগিতায় ছিল তরুণ আলেম প্রজন্ম, কিশোরগঞ্জ।

প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই অনন্য কর্মসূচিতে দারুল আরকাম ইনস্টিটিউট-এর কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের বিভিন্ন শাখার শিক্ষার্থীরা একযোগে কোরআন খতমে অংশগ্রহণ করে। ঘণ্টাব্যাপী ইবাদতের মাঝে সম্পন্ন হয় ১০ খতম কোরআন। পরে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় করা হয় বিশেষ মোনাজাত।

এই আয়োজনটি কেবল একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়—বরং নতুন প্রজন্মের মাঝে ইতিহাস সচেতনতা, আত্মত্যাগের মর্যাদা এবং ইসলামি মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলার এক সফল প্রয়াস বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কোরআন খতম শেষে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তৃতা রাখেন: জামিয়া ইমদাদিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা শিব্বীর আহমদ রশীদ, কবি ও লেখক মাওলানা সাইফ সিরাজ, দারুল আরকাম ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, জামিয়ার নায়েবে মুহতামিম, আবু বকর মুফতি আব্দুল্লাহ সাদেক, দারুল আরকাম ইনস্টিটিউটের সহকারী পরিচালক মাওলানা আকরাম খন্দকার, শিক্ষক ও সংগঠক মাওলানা এ কে এম নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মত্যাগ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এ ধরনের আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের অংশগ্রহণে কোরআন খতম কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়—এটি ইতিহাস চেতনার বীজ বপনের এক পদ্ধতি। শহীদদের আত্মার শান্তি ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় দেশজুড়ে এমন আয়োজন হওয়া উচিত।”

বক্তারা আরও বলেন, “মৃত্যুর পর মাইয়াতের জন্য কোরআন তেলাওয়াত ও দোয়া অত্যন্ত উপকারী। এটি শহীদদের আমলনামায় যুক্ত হবে, ইনশাআল্লাহ। তাই শহীদদের স্মরণে কুরআন খতম একটি বাস্তবসম্মত ও ফলপ্রসূ পন্থা।”

আয়োজনের শেষে আবেগঘন পরিবেশে মাওলানা শিব্বীর আহমদ রশীদ শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতার জন্য মোনাজাত পরিচালনা করেন।

প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আয়োজিত এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানটি কিশোরগঞ্জের ধর্মপ্রাণ মানুষ ও সচেতন সমাজের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে। অনেকেই বলেছেন, “এ ধরনের উদ্যোগে ইতিহাস ও প্রজন্মের মধ্যে এক শক্তিশালী সেতুবন্ধন তৈরি হয়। এমন আয়োজন নিয়মিত হওয়া উচিত।”

আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলোতেও তারা এ ধরনের উদ্যোগ চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে।

সত্য, শ্রদ্ধা ও স্মরণে গড়া এই ব্যতিক্রমী আয়োজনে যেন কিশোরগঞ্জের মাটি আবারও জানিয়ে দিল— “শহীদদের আমরা ভুলিনি।”