কিশোরগঞ্জে রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লিটন মিয়ার বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে ‘এলাকাবাসী’র ব্যানারে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণকারীরা নানা স্লোগানে ওসির অপসারণ দাবি করেন।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ওসি লিটন মিয়া বিচারপ্রার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় এবং মাদক কারবারিদের কাছ থেকে মাসিক অর্থ গ্রহণসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছেন। তারা দাবি করেন, এসব অনিয়ম এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে সাধারণ মানুষ বাড়িতেও নিরাপদ বোধ করছে না।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগী কমলা বেগম, দীন ইসলাম এবং জেলা যুবদলের নেতা ফারুক। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন যুবদল ও শ্রমিকদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।

ভুক্তভোগী দ্বীন ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “পৈত্রিক জমির গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে রেলওয়ে পুলিশ তাদের বাড়িতে গিয়ে থানায় যেতে বলে। পরে থানায় গিয়ে ওসি লিটনের কাছে ৫ হাজার টাকা দিলে গাছ কাটায় আর কোনো সমস্যা হবে না বলে জানানো হয়।”
কমলা বেগম বলেন, “আমাকে থানায় ডেকে নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখে। প্রথমে তিন হাজার টাকা দিলে সেটা ফেলে দেন। পরে আমার মেয়ের জামাই মোবাইল থেকে দুই হাজার টাকা তুলে দিলে তখন বলেন সমস্যা নেই।”
অভিযোগ করে জেলা যুবদল নেতা ওমর ফারুক বলেন, “এই ওসি আওয়ামী দোসর হিসেবে এলাকায় দাপট দেখাচ্ছেন। মাদক কারবারিদের সাথে আতাত, নিরীহ মানুষদের মামলা দিয়ে হয়রানি—এসবই তার নিত্যদিনের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা অবিলম্বে তার অপসারণ ও শাস্তি চাই।”
অভিযোগগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ে থানার ওসি মো. লিটন মিয়া বলেন, “এই বিষয়ে তদন্ত চলছে, আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানার আওতাধীন আঠারোবাড়ি রেল স্টেশনের কাছে উত্তর বনগাঁও এলাকার বাসিন্দা রতন মিয়া দশ বছর আগে নিজের জমিতে দুটি গাছ রোপণ করেন। গাছগুলো রেললাইনের সীমানা থেকে সাত ফুট দূরে থাকলেও গত ১৭ জুন সেগুলো কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ বাড়িতে হাজির হয়। পরদিন রতনের প্রতিবন্ধী স্ত্রী কমলা বেগম ও মেয়ের জামাই দীন ইসলাম থানায় গেলে মামলা দিয়ে ভয় দেখিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
বিক্ষোভকারীরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “দ্রুত ওসি লিটনকে অপসারণ করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।”

