‘মেধা ও মননে সুন্দর আগামী’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো ব্যতিক্রমী ও বর্ণিল আয়োজন কৈশোর মেলা ২০২৫। স্বাস্থ্য ও সামাজিক সচেতনতার নানা বার্তা নিয়ে রোববার (২২ জুন) করিমগঞ্জ সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় এই আয়োজন।
দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) আয়োজিত এবং পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সহায়তায় আয়োজিত মেলায় অংশ নেয় উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভাসহ মোট ১২টি ইউনিটের কিশোর-কিশোরী ক্লাবের দুই শতাধিক সদস্য।
মেলায় কিশোর-কিশোরীদের উপস্থাপনায় ছিল ১০টি বৈচিত্র্যপূর্ণ স্টল—রক্ত পরীক্ষা ও গ্রুপ নির্ণয়, নিরাপদ খাদ্য, হাওরের জীববৈচিত্র, কুটির শিল্প ও কারুকার্য, নেতৃত্ব ও মূল্যবোধ, সামাজিক স্বাস্থ্য সচেতনতা, পরিবেশ ও বনায়ন, মা ও শিশু সুরক্ষা, পিঠা কর্নার এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা।
এসব স্টলে তারা তুলে ধরে নিজেদের উদ্ভাবনী চিন্তা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সচেতনতার বার্তা। পিঠা কর্নারে ছিল নিজ হাতে তৈরি নানা ধরনের দেশি পিঠা, যা ছিল দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ।
স্টল প্রদর্শনীর পাশাপাশি মেলার একটি বড় আকর্ষণ ছিল সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। কিশোর-কিশোরীরা অংশ নেয় কবিতা আবৃত্তি, দেশাত্মবোধক গান, নৃত্য, অভিনয় এবং দৌড়সহ নানা প্রতিযোগিতায়। সকাল থেকেই মুখরিত ছিল মেলার মাঠ, যেখানে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
মূল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন করিমগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. সিদ্দিক উল্লাহ। তিনি বলেন,
“এই কিশোর-কিশোরীরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের চিন্তা, সৃজনশীলতা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখে আমি মুগ্ধ। এমন আয়োজন বেশি বেশি হওয়া দরকার।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. শহীদুজ্জামান ভূঞা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএসকের কিশোরগঞ্জ-২ অঞ্চলের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মো. সজল মিয়া।
মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন ডিএসকের করিমগঞ্জ উপজেলা প্রোগ্রাম অফিসার মো. জুয়েল খান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন করিমগঞ্জ সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক জোনায়েদ আলম খান, ডিএসকের করিমগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক মো. আল আমিনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
দিনব্যাপী কর্মসূচি শেষে স্টল ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিবৃন্দ। তারা বলেন, এই আয়োজন কিশোর-কিশোরীদের আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্ব ও সামাজিক সচেতনতা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এই আয়োজন শুধু একটি মেলা নয়, বরং এক নতুন প্রজন্মের চিন্তা, চেতনা ও মানবিক সমাজ গড়ার স্বপ্নের প্রতিচ্ছবি। করিমগঞ্জের কিশোর-কিশোরীদের মুখে যেন শোনা গেলো আগামীর বাংলাদেশকে নতুন আলোয় গড়ার আহ্বান।
