দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাব খুলে মুক্ত করে দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (৯আগস্ট) সন্ধ্যায় তারা প্রেসক্লাবের মূল ফটক খুলে ভেতরে প্রবেশ করে।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের আহ্বানে জেলার বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মীও উপস্থিত হন।
পরে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে নিয়ে ক্লাবের কনফারেন্স রুমে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা। এতে প্রেসক্লাব ভাঙচুরের নিন্দা জানানো হয়। তারা বলেন, ‘আমরা বৈষম্য ভাঙতে আন্দোলন করেছি। প্রেসক্লাবে বৈষম্য থাকুক, সেটা শিক্ষার্থীরা চায় না।’
ক্লাব খুলে দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন চব্বিশের বিপ্লব এর অন্যতম সংগঠক সায়েদ সুমন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা এসে প্রেসক্লাব খুলে দিয়ে গেলো। আজ থেকে দলমত নির্বিশেষে সাংবাদিকদের প্রেসক্লাবে বসে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নুসরাত জাহান তার বক্তব্যে বলেন, “দীর্ঘদিন কিশোরগঞ্জ প্রেস ক্লাবে তালা ঝুলছে। এই ক্লাব সাংবাদিকদের জায়গা। এখানে পেশাদার সাংবাদিকরা নিয়মিত বসবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
২০২০ সালে কিশোরগঞ্জ প্রেস ক্লাব সিলগালা করে বন্ধ ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। ক্লাবের কার্যকরী কমিটি নিয়ে একটি মামলা আদালতে চলমান আছে।
মামলার বিষয় আদালত দেখবে বলে উল্লেখ করেন শিক্ষার্থী রাকিব মাহমুদ। তবে আইনি মীমাংসা হওয়ার আগে এই ক্লাব বন্ধ খোলা রাখা উচিত বলেই মনে করেন তিনি।
সংগঠক সায়েদ সুমন বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের সহযোগী কয়েকজন কুক্ষিগত করে রেখেছিলো কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাব। এরা সাধারণ সাংবাদিকদের পেশাগত কাজের প্রতিবন্ধক ছিলো। একটা রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদি হাসিনাকে হটিয়ে বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বার স্বাধীন করেছি আমরা। বাংলাদেশের ইতিহাসে যত সংগ্রামের সফলতা এসেছে সবগুলো ছাত্রদের হাত ধরে। আমাদের আন্দোলন ছিলো বৈষম্য দূর করতে। আজ ফ্যাসিবাদের কবল থেকে ক্লাবকে সাংবাদিকদের জন্য মুক্ত করে দেওয়া হলো।’
মামলার বিষয়টি সুরাহা হওয়ার পর পেশাদার সকল সাংবাদিককে ক্লাবের সদস্য করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
কনফারেন্স রুমে উপস্থিত ছিলেন জিহাদ, আরিফ, হৃদয়, নুসরাত জাহান, মোছা. রাবেয়া, তামান্না, স্বর্ণা, আফসানা, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. রুবেল মিয়াসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যম কর্মী।
শিক্ষার্থীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রেসক্লাবে ছিলেন দৈনিক নয়া দিগন্তের কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি মো. আল আমিন, চ্যানেল আই ও জাগো নিউজের জেলা প্রতিনিধি এসকে রাসেল, এখন টিভি ও ঢাকা মেইলের প্রতিনিধি মশিউর কায়েস, হাওর টাইমসের সম্পাদক খাইরুল ইসলাম, বিজয় টিভি ও দৈনিক কালবেলার মো. শরফ উদ্দিন (জীবন), দীপ্ত টিভির জেলা প্রতিনিধি তোফায়েল আহমেদ তোষার ও জনবানীর প্রতিনিধি শরীফুল ইসলাম।
শিক্ষার্থীদের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন তারা। সাংবাদিকদের মধ্যে সমন্বয় করার জন্য মো. আল আমিনকে দায়িত্ব দেয় শিক্ষার্থীরা।