রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৪ অপরাহ্ন
কিশোরগঞ্জে সেই ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সেফাতুলসহ ১২ জনের নামে ফের মামলা
Avatar
আপডেট : মঙ্গলবার, ৯ জুলাই, ২০২৪, ২:০০ অপরাহ্ন

কিশোরগঞ্জে কালেক্টরেটের প্রাক্তন ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. সেতাফুল ইসলামসহ ১২জনের বিরুদ্ধে ফের মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুদক কিশোরগঞ্জ জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহাথীর মুহাম্মদ সামী। মামলায় জনগণের ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ক্ষতিপূরণের ৫ কোটি টাকার মধ্যে পৌনে চার কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং প্রায় ৯ কোটি টাকা গড়মিলের অভিযোগে আনা হয়েছে।

বাকি ১১ জনের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের সাবেক অডিটর মো. সৈয়দুজ্জামান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, একে আল মামুন, মো. কামরুজ্জামান, মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. আনিছুর রহমান, মোহাম্মদ মাহমুদ হোসেন শিমুল, রায়হান উদ্দিন, জিলন খাঁন, আবুল কালাম ও আব্দুল হামিদ।

মামলা সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ২০১৩-১৪ সালে ভৈরবের বিসিক শিল্পনগরী প্রকল্প, ২০১৪-১৫ সালে বাজিতপুর উপজেলা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, ২০১৪-১৫ সালে অষ্টগ্রামের চৌদন্ত সড়ক প্রকল্প এবং ২০১৪-১৫ সালে উজানচর-বাজিতপুর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের মূল্যবাবদ চারটি এলএ কেসের বিপরীতে পৃথক ১২টি চেকের মাধ্যমে মোট তিন কোটি ৭৯ লাখ টাকা দেওয়া হয়। চেকগুলো গ্রহণ করেন আব্দুল্লাহ আল মামুন, কে এ আল মামুন, মো. কামরুজ্জামান, মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. আনিছুর রহমান, মোহাম্মদ মাহমুদ হোসেন শিমুল, রায়হান উদ্দিন, জিলন খাঁন, আবুল কালাম ও আবদুল হামিদ নামের ১০ জন ব্যক্তি। কিন্তু তারা কেউই এসব প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি নন।

ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির আবেদন গ্রহণ, মালিকানা স্বত্ত্বের প্রামাণিক দলিল ছাড়া ও সংশ্লিষ্ট রোয়েদাদ বইতে লিপিবদ্ধ না করে এবং স্বত্ত্ব মালিকানা অনুযায়ী বিতরণ না করে নিজ উদ্যোগে অধিকাংশ এলএ চেকের মুড়ির অংশ ও প্রাপকের অংশে ভিন্ন তথ্য লিপিবদ্ধ করেন ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. সেতাফুল ইসলাম। এভাবে ১২টি চেক বিতরণের মাধ্যমে মোট তিন কোটি ৭৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি।

এছাড়া তিনি এসব চেকসহ অন্যান্য এলএ চেক নগদায়নের জন্য ভুয়া এডভাইস তৈরি ও জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে পাঠানোর পর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এলএ শাখাকে বাইপাস করে বিভিন্ন এলএ চেক বিভিন্ন ব্যক্তিকে দেন। এতে চারটি প্রকল্পের লেজার বইয়ের সঙ্গে জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রারসমূহের মোট ৮ কোটি ৯৬ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬ টাকার গড়মিল ধরা পড়ে।

এসব চেকসহ অন্যান্য এলএ চেক নগদায়নের জন্য ভুয়া এডভাইস তৈরি ও ভুয়া এডভাইস বিধিবহির্ভূতভাবে গ্রহণ এবং ব্যবহার করেন জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের প্রাক্তন অডিটর মো. সাইদুজ্জামান। এছাড়া এসব চেক তিনি নগদায়ন করেন।

এর আগে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কিশোরগঞ্জ জেলায় ‘হাওর এলাকার বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন প্রকল্প’ এর জন্য মোট ১৪০.৩৯৯ একর ভূমি অধিগ্রহণের মূল্য বাবদ অগ্রিম হিসেবে তিনটি এলএ কেসের বিপরীতে পৃথক তিনটি চেকের মাধ্যমে মোট পাঁচ কোটি ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুদক ময়মনসিংহ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাম প্রসাদ ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি মো. সেতাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা করেন। আসামিরা এর আগে ওই মামলায় কারাভোগ করেছেন। বর্তমানে জামিনে আছেন। চার্জশীট দাখিল শেষে মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন।

সম্পর্কিত
ফেইসবুক পেইজ