কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ১৯৭তম ঈদুল ফিতরের জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। জামাতে ইমামতি করবেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মুফতি ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন বড় বাজার মসজিদের খতিব মাওলানা শোয়াইব বিন আব্দুর রউফ।
সোমবার (১১ মার্চ) জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে শোলাকিয়া ঈদগা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঈদগা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।
সভায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নূরে আলম, পৌর মেয়র মো. মাহমুদ মিয়া, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজ, ঈদগা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সদর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এবার শোলাকিয়ায় ঈদগারের ১৯৭তম ঈদুল ফিতরের জামাতের নিরাপত্তা পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি মোতায়েন থাকবে ৫ প্লাটুন বিজিবি। থাকবেন প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা। দূর দূরান্তের মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে জামাতের সময় ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ ও ভৈরব কিশোরগঞ্জ রুটে থাকবে দুটি বিশেষ ট্রেন সার্ভিস। অন্যদিকে শহরের সরযূ বালা সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ে মহিলাদের পৃথক ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন নগুয়া আয়শা আহাদ দাখিল মাদ সহকারী মৌলভী মাওলানা মো. ছানাউল্লাহ।
উল্লেখ্য, ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ২০১৬ সালের ৭ জুলাই জঙ্গি হামলার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য, এক নারী এবং এক জঙ্গিসহ চারজন নিহত হন। এ হামলায় পুলিশসহ ১৬ মুসল্লি আহত হন। কিন্তু তারপরও ভাটা পড়েনি ঐতিহাসিক এ ঈদগাহ ময়দানের ঈদের জামাতে মুসল্লিদের সমাগমে।
জনশ্রুতি আছে, শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ ঈদের জামাতের মোনাজাতে ভবিষ্যতে মাঠে মুসল্লিদের প্রাচুর্যতা প্রকাশে ‘সোয়া লাখ’ কথাটি ব্যবহার করেন। অন্য একটি মতে, সেইদিনের সেই জামাতে ১ লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়া লাখ লোক জমায়েত হন। ফলে ‘সোয়া লাখে’র অপভ্রংশ হয়ে ‘শোলাকিয়া’ নামটি চালু হয়ে যায়।
পরবর্তীতে ১৯৫০ সালে স্থানীয় দেওয়ান মান্নান দাদ খাঁ (মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর) ঈদগাহের জন্য ৪ দশমিক ৩৫ একর জমি শোলাকিয়া ঈদগাহে ওয়াকফ করেন। এই মাঠে ২৬৫টি কাতার আছে, প্রতিটি কাতারে ৫০০ মুসল্লি নামাজের জন্য দাঁড়াতে পারেন।
বর্তমানে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের চেয়েও বড় বড় ঈদগাহ ময়দান প্রতিষ্ঠিত হলেও মুসল্লির উপস্থিতির দিক থেকে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত ঈদুল ফিতরের জামাতই এ উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদুল ফিতরের জামাত হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।