কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ইমাম প্রতারণার শিকার হননি। এমনকি ওই মসজিদের ইমাম হিসেবে যার নাম ব্যবহার করা হচ্ছে, ওই নামে পাগলা মসজিদে কোনো ইমাম নেই।
শনিবার (৩০ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেন পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, এমাদ উদ্দিন নামে পাগলা মসজিদে কোনো ইমাম নেই। এমনকি কোনো কর্মকর্তাও এ নামে নেই বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুর থেকে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হতে থাকে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ইমাম প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এতে উদ্ধৃতি দেওয়া হয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদের।
সংবাদ মাধ্যমগুলোতে দাবি করা হয়, শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এতথ্য জানান ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ।
প্রতিবেদনগুলোতে উল্লেখ করা হয়, সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন এবং ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানোর নাম করে কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের ইমামের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ৪৩ লাখ টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবেদনে উল্লেখ কিশোরগঞ্জ সদর থানার বত্রিশ এলাকার বাসিন্দা ও জেলার ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের ইমাম এমাদ উদ্দিন আসলে পাগলা মসজিদের ইমাম নন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) স্টোরকিপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিন বছর আগে কিশোরগঞ্জের বিএডিসি অফিস থেকে অবসরে গেছেন। তিনি প্রতারণার শিকার হয়ে পাগলা মসজিদের ইমামের রেফারেন্সে ডিবিপ্রধান হারুনের কাছে গিয়েছিলেন। এমনকি রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় করা এজাহারেও পাগলা মসজিদে ইমাম বিষয়টি উল্লেখ নেই।
প্রতারণা শিকার এমাদ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি জেলা শহরের বত্রিশ এলাকার বাসায় রয়েছেন। তিনি পাগলা মসজিদের ইমাম নন।
এমাদ উদ্দিন আরও বলেন, ‘আমি বিএডিসির স্টোরকিপার ছিলাম। তিন বছর আগে অবসরে গেছি। প্রতারণার শিকার হয়ে পাগলা মসজিদের ইমামের কাছে বিষয়গুলো খুলে বলি। তখন পাগলা মসজিদের ইমাম আমাকে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদের কাছে পাঠান।’
পাগল মসজিদে বর্তমানে দুজন ইমাম রয়েছেন। মসজিদের পেশ ইমাম হিসেবে রয়েছেন মাওলানা মুফতি খলিলুর রহমান। আর খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা আশরাফ আলী।