শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫০ পূর্বাহ্ন
থেমে নেই চলনশক্তিহীন পাকুন্দিয়ার নারান্দীর তৌহিদের জীবন সংগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : রবিবার, ৯ জুন, ২০২৪, ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন

জন্মের পর থেকেই চলনশক্তিহীন তৌহিদ মিয়া (৩০)। শক্তি নেই দুই হাতেও। এরপরও থেমে থাকেননি তিনি। প্রবল ইচ্ছা শক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। জীবন সংগ্রামে নিজেকে উজাড় করে চলেছেন। কারো কাছে হাত না পেতে কিছু একটা করে সংসার চালাচ্ছেন। এতে হিমশিম খেলেও অতৃপ্তি নেই তার মনে।

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার নারান্দী ইউনিয়নের নারান্দী গ্রামের বাসিন্দা তৌহিদ। তিনি ওই গ্রামের জামাল উদ্দিন মাস্টারের ছেলে। চলনশক্তিহীন তৌহিদ পেশায় একজন মোবাইল মেকানিক।

জানা গেছে, নারান্দী গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক জামাল উদ্দিনের তিন ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের মধ্যে সর্ব কনিষ্ঠ তৌহিদ। জন্মের পর থেকেই সে চলনশক্তিহীন। দুই হাতেও নেই শক্তি। তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। পাকুন্দিয়া পৌরসদরের জনতা ব্যাংকের নিচতলায় ছোট একটি দোকান রয়েছে তার। সেখানে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করেন তিনি।

সরেজমিনে তার দোকানে গিয়ে দেখা গেছে, হুইল চেয়ার থেকে হামাগুড়ি দিয়ে দোকানে প্রবেশ করছেন তিনি। একটু সময় নিয়ে একাই ভেতরে প্রবেশ ও বাহির হতে পারেন। তবে দোকান কিছুটা উঁচুতে হওয়ায় মাঝে মধ্যে অপরের সহযোগিতা নিতে হয় তাকে।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলালে তৌহিদ তার জীবন সংগ্রামের কথা জানান। তিনি জানান, জন্মের পর থেকেই তিনি চলনশক্তিহীন। হুইল চেয়ার ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না। বর্তমানে তার বয়স ৩০ এর মতো হবে। তবে প্রতিবন্ধী হলেও তিনি কারও কাছে হাত পাতেন না। মোবাইল মেরামতের কাজ শিখেছেন। এ কাজ করেই কোনো রকমে সংসার চলছে তার।

তিনি বলেন, বছর তিনেক আগে সংসার করেছি। আমার স্ত্রীও একজন প্রতিবন্ধী। তিনি বাক প্রতিবন্ধী। সংসার জীবনে আমার দুই বছরের এক মেয়ে ও তিন মাস বয়সের এক ছেলে সন্তান রয়েছে। মোবাইল মেরামতের কাজ করেই সংসার চলছে। শরীর অসুস্থ থাকায় দোকানে তেমন একটা সময় দেওয়া সম্ভব হয়না। তারপরও বাধ্য হয়ে কাজ করতে হয়। কাজ না করলে সংসার চলবে কীভাবে। তিনি আরও বলেন, আমি কাজ পারি। কাজ করে রোজগার করি। মানুষের কাছে হাত পাতবো কেন। কাজ করে যা রোজগার করি তা দিয়েই কোনো রকমে সংসার চলে।

কোনো প্রতিবন্ধী ভাতা পান কী-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, স্বামী-স্ত্রী দুজনই ভাতা পান। তবে তিনি জানান, যে হুইল চেয়ার দিয়ে চলাফেরা করেন সেটি অনেকটাই বিকল। একটি ইলেকট্রিক হুইল চেয়ার হলে ভালো মতো চলাফেরা করতে পারতেন এবং বাড়ি থেকে দোকানে আসা-যাওয়া করতে সুবিধে হতো। কিন্তু ইলেকট্রিক হুইল চেয়ার কেনার মতো সামর্থ্য নেই তার। কেউ তাকে একটি ইলেকট্রিক হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দিলে উপকার হতো।

সম্পর্কিত
ফেইসবুক পেইজ