জমি অধিগ্রহণের পর মহাসড়ক নির্মাণ হলেও এখন পর্যন্ত অধিগ্রহণকৃত জমির মূল্য পায়নি শতাধিক পরিবার। এমন অভিযোগ উঠেছে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া-মির্জাপুর-টোক মহাসড়কের বরাটিয়া মৌজা এলাকার বাসিন্দাদের। দ্রুত অধিগ্রহণকৃত জমির মূল্য পেতে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে নির্মিত মহাসড়কে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ-পাকুন্দিয়া-টোক পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কের সম্প্রসারণের কাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। সড়কটি সম্প্রসারণের জন্য পাকুন্দিয়া উপজেলার বরাটিয়া মৌজায় জমি অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু জমির ক্ষতিপূরণ না দিয়ে সড়কের সম্প্রসারণের কাজ শেষ করা হয়েছে। ২০২১ সালে ওই এলাকার ১২০জন মালিকের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। যার অর্থ এখনও পরিশোধ করা হয়নি। ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে গড়িমসি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অধিগ্রহণের টাকা দেওয়ার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন সুরাহ্ মিলছে না ভুক্তভোগীদের।
ভুক্তভোগী নুরুল ইসলাম বলেন, অধিগ্রহণের জন্য ২০২০ সালে প্রথম নোটিশ প্রদান করে। ২০২৩ সালের ভেতর সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। রাস্তা নির্মাণের জন্য আমাদের জমি অধিগ্রহণ, স্থাপনা ভাঙচুর, গাছ কাটা হয়েছে। আমাদের যে ক্ষতি করা হয়েছে তার কোন টাকা আমরা পাইনি।
আবু রায়হান রতন বলেন, আমি একজন কৃষক আমার ধানের দশ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অধিগ্রহণের পর থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা পেতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে যাওয়া আসায় আমরা হয়রান হয়ে গিয়েছি। আমরা কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। আমাদেরকে আজ-কাল বলে তালবাহানা করা হচ্ছে।
আজিজুর রহমান ফারুক বলেন, বরাটিয়া মৌজায় আমার সাড়ে দশ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এখানে প্রতি শতাংশ জমির দাম ১৫ লাখ টাকা। তিন বছর চলে গেছে এখনও আমার জায়গার মূল্য পাইনি।
রশিদ মিয়া জানান, এখানে এমনও পরিবার রয়েছে যাদের শেষ সম্বলটুকু অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ঘরবাড়ি ভেঙ্গে জায়গা নেওয়া হয়েছে। তাদেরকে কে দেখবে? টাকা গুলো পেলে হয়তো জায়গা ক্রয় করে ঘরবাড়ি করতে পারবে। ১২০জন এই অধিগ্রহণের টাকা থেকে বঞ্চিত। দ্রুত অধিগ্রহণের টাকা দেওয়ার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানান।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এ টি এম ফরহাদ বলেন, অধিগ্রহণের বরাদ্দকৃত টাকা পেতে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এখানে যারা ক্ষতিগ্রস্থ রয়েছেন তাদের প্রত্যেক্ষের ক্ষতির সঠিক মূল্য দেওয়া হবে। বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত। হয়তো অল্প কিছুদিনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থরা টাকা পেয়ে যাবেন।