রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩১ অপরাহ্ন
বিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণের টাকা ফেরত না দিতে নানা ষড়যন্ত্র দাতার
Avatar
আপডেট : শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০২৪, ১০:২৭ পূর্বাহ্ন

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণের এক কোটি ৭৬ লাখ টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়ার পর বিদ্যালয়টিকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য নানা ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য মো. জিল্লুর রহমান ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে।

আজ শুক্রবার (১৪ জুন) দুপুরে পাকুন্দিয়া প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. নূরুল আফছার। সম্প্রতি এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ১৪৬নং হাজী মো. মাছিম উদ্দীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যালয়ের সভাপতি কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান রাসেল, সহকারী শিক্ষক মো. জয়নাল আবেদিন, হোসনে আরা ও কানিজ ফাতেমা বেলিসহ বেশ কয়েকজন অভিভাবক ও শিক্ষার্থী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রধান শিক্ষক মো. নূরুল আফছার বলেন, বিদ্যালয়টি ১৯৯০ সালে পাইক লক্ষীয়া মৌজার ৪৭৫ দাগের ২৯ শতাংশ ভূমির ওপর স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১২০জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সুনামের সহিত পরিচালিত হয়ে আসছে। জিল্লুর রহমান ১৯৯৪ সালে বিদ্যালয়টির অনুকুলে ২৩ শতাংশ জমি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) নামে দলিল রেজিষ্ট্রি করে দেন। এ সময় জমিটি বিদ্যালয়ের নামে নামজারিও করা হয়। সম্প্রতি ঢাকা-পাকুন্দিয়া-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের প্রশস্তকরণসহ পাকুন্দিয়া অংশে একটি বাইপাস সড়ক নির্মান কাজে ওই বিদ্যালয়ের ২৩ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের আওতার মধ্যে পড়ে। এরপর থেকে জিল্লুর রহমান বিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণের টাকা নিজ নামে হাতিয়ে নেওয়ার ফন্দি আঁটতে থাকেন। তিনি বিদ্যালয়ের নামে জমি লিখে দেওয়ার বিষয়টি গোপন করে পুরাতন কাগজপত্র দেখিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে বিদ্যালয়ের জমিটি উপজেলা ভূমি অফিস থেকে নিজ নামে নামজারি করে নেন। নামজারি ও জমা খারিজের মঞ্জুরি আদেশ নিয়ে নিজ নামে টাকা উত্তোলনের জন্য জেলা প্রশাসনের ভ‚মি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখায় আবেদন করেন। আবেদনটি মঞ্জুর হওয়ার পর এলএ শাখা থেকে ২৩ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের এক কোটি ৭৬ লাখ টাকার একটি চেক তুলে নেন জিল্লুর রহমান।

প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, বিষয়টি জানাজানি হলে ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর বিদ্যালয়ের সভাপতি মাহমুদুল হাসান রাসেল বাদি হয়ে দাতা সদস্য জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে একটি অর্থ আত্মসাতের মামলা করেন। চলতি বছরের ২০ মার্চ আদালত ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে ওই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য জিল্লুর রহমানকে নির্দেশ দেয়। কিন্তু ওই টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো বিদ্যালয়টিকে ধ্বংস করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে দাতা সদস্য জিল্লুর রহমান ও তার সহযোগিরা।

বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. মাহমুদুল হাসান রাসেল বলেন, জমি অধিগ্রহণের ওই টাকা গুলো যাতে ফেরত দিতে না হয় সেজন্য নানা ষড়যন্ত্র করে বিদ্যালয়টিকে ধ্বংস করতে চাচ্ছে জিল্লুর রহমান। শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে স্কুলে আসতে নিষেধ করছে জিল্লুর রহমানের ছেলে কাউছার ও ভাতিজা জালাল। শুধু তাই নয় সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার করছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে প্রাণনাশের হুমকিও দিচ্ছে তারা।

এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত জিল্লুর রহমানের ছেলে কাওসার বিদ্যালয়ে বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, জমি অধিগ্রহনের টাকার বিষয়টি নিয়ে আমাদের পক্ষ থেকে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার রায় যদি আমাদের পক্ষে আসে তাহলে আমরা টাকা রাখবো আর বিপক্ষে গেলে টাকা ফেরত দিয়ে দিব।

সম্পর্কিত
ফেইসবুক পেইজ